সেটা ’৭০-এর দশক। হাতিবাগানের থিয়েটার পাড়া তখন জমজমাট। বাঙালির যাবতীয় নীতিবাগীশপনাকে আগুনে স্তম্ভিত করে একটা শব্দ ছিটকে ওঠে সেই সময়— ‘ক্যাবারে’। আর এই শব্দটার অনুষঙ্গে উঠে আসে একটাই নাম— মিস শেফালি। বাংলা সিনেমা পত্রিকার নিউজপ্রিন্ট-একঘেয়েমিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয় শেফালির ফোটো-গ্যালারি। বাঙালির অন্দরমহলের সুচারু অবরোধ কী ভাবে যেন ঘেঁটে যায় এই একটি মাত্র নামে। সময়ের অভিজ্ঞানকে ধরে রাখতে সত্যজিৎ রায়ের মতো পরিচালকও শেফালিকে নিয়ে আসেন ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ছবির এক দমচাপা সিকোয়েন্সে। কালের প্রকোপে ‘ক্যাবারে’ আর ‘মিস শেফালি’— এই দুটো শব্দই হারিয়ে যায় বাঙালির ব্যক্তিগত অভিধান থেকে। তবে আবার ফিরে আসছে তারা। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর হাত ধরে।

সেই হারিয়ে যাওয়া সময়, কালচার আর মানুষকেই কি খুঁজে পেতে চাইছেন পরিচালক নীতীশ রায় তাঁর ‘তদন্ত’ নামের ছবিতে? ‘তদন্ত’ মূলত সেই মেয়েটির বায়োপিক, যে আরতি দাস থেকে ক্রমে ক্রমে মিস শেফালি হয়ে ওঠে। এই ‘হয়ে ওঠা’-র পথে তাকে পেরোতে হয় অসংখ্য বিশ্বাসভঙ্গ আর বিচ্ছেদ, পেরোতে হয় পুরুষতন্ত্রের বিছিয়ে রাখা অগুনতি কাঁটা। এই ছবিতেই মিস শেফালির ভূমিকায় দেখা যাবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। সম্প্রতি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঋতুপর্ণা জানালেন, ‘তদন্ত’ এক নারীর নিজস্ব সংগ্রামের ছবি। দু’জন পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপড়েন আর তাকে ঘিরে ঘুরতে থাকা সুখ-দুঃখ, স্মৃতি-বিস্মৃতির আখ্যান। ‘তদন্ত’-য় ঋতুপর্ণার সঙ্গে অভিনয় করছেন বাংলা মঞ্চের এই মুহূর্তের দুই দুঁদে অভিনেতা দেবশংকর হালদার এবং গৌতম হালদার।