Sports

ছেলের কীর্তিতে গর্বিত যে বাবা


   
মিরপুর গ্যালারিতে ছেলের খেলা দেখতে সাতক্ষীরা থেকে চলে এসেছেন মুস্তাফিজের বাবা-মা। ছবি: রানা আব্বাস 


সাতক্ষীরা থেকে ঢাকার দূরত্বটা কোনো ব্যাপারই মনে হয়নি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের পরিবারের কাছে। ঘরের ছেলেকে নাকি সারা বিশ্ব চিনে গেছে! তো, ছেলে মাঠে কী করছে তা একবার দেখতে হবে না? কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে বসেই দেখলেন ছেলের খেলা। একটু যেন অচেনা ঠেকছিল ঘরের ওই প্রাণচঞ্চল ছেলেটিকে! মাঠে লাল-সবুজ জার্সি পরে ধোনি, রোহিত, রায়নাদের বারবার বিপাকে ফেলা ওই ছেলেটি সত্যিই তাঁদের তো! চোখের কোণটাও যে ভিজে উঠছিল বারবারই।
 
এমন ছেলের বাবা হওয়াও তো গৌরবের। মুস্তাফিজের বাবা আবুল কাশেম গাজী ভীষণ গর্বিত। অনেক ধকল সামলে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় এসেছেন। যশোর থেকে ঢাকায় বিমানে উড়ে এলেও গ্রামের বাড়ি থেকে তিন ঘণ্টা সড়ক ভ্রমণ করে যেতে হয়েছে যশোরে। ঢাকায় এসে বিমানবন্দর থেকে আরেক গাড়িতে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। ধকল সামলে কথা বলতেও যেন একটু অসুবিধা হচ্ছিল মুস্তাফিজের বাবা আবুল কাশেমের।
 
তবে, কষ্ট হলেও তিনি কথা বললেন! কথা তো তিনি বলবেনই। কৃতী ছেলের গর্বিত বাবা, কিছু না বলে কি তিনি থাকতে পারেন? বললেন, ছেলের সাফল্য তাঁদের গর্বিতই করেছে। তিনি আরও খুশি তাঁর ছেলে দেশকে কিছু দিতে পেরেছেন বলে!
 
কেবল বাবাই নন; মুস্তাফিজের খেলা দেখতে এসেছেন মা মাহমুদা খাতুন, বড় ভাই মাহফুজার রহমান, বোন সালেহা মাহমুদ ও কয়েকজন নিকটাত্মীয়। আশপাশ থেকে অনেক কৌতূহলী চোখ দেখছে মুস্তাফিজের পরিবারকে। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়ের মূল নায়কের পরিবার যে চোখের সামনে!
ম্যাচ শুরুর পর পৌঁছেছেন স্টেডিয়ামে, মুস্তাফিজ তখনো জানেন না পরিবারের সদস্যরা স্টেডিয়ামে এসে পৌঁছেছেন কি না। কাশেম গাজী অবশ্য বললেন, ‘গত রাতে কথা হয়েছে; জানে আমরা আসব।’ খেলা শেষ হতে প্রায় মধ্যরাত। বললেন, ‘আজ বোধ হয় ওর সঙ্গে দেখা হবে না। কাল সকালে দেখা করব।’ 
অভিষেকেই ৫ উইকেট, দ্বিতীয় ম্যাচে ৬। তৃতীয় ম্যাচে ২ উইকেট নিয়ে তিনি গড়লেন নতুন এক রেকর্ড। ক্যারিয়ারের প্রথম তিন ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড। অভিষেকের প্রথম দুই ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে আগেই গড়েছেন বিশ্ব রেকর্ড। ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ওয়ানডেতে ১১ উইকেট নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশের এ বাঁহাতি পেসার। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সোনালি পাতাতেই লেখা হয়ে গেছে মুস্তাফিজুর রহমান নামটি।
 
অথচ দুরন্ত এ মুস্তাফিজকে নাকি ক্রিকেটারই বানাতে চাননি বাবা! প্রসঙ্গটা তুলতেই বড় ভাই মাহফুজার পাশ থেকে বললেন, ‘আসলে আমরা সব ভাই এলাকার বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ভালো খেলতাম। বাবা চাইতেন 

ক্রিকেট খেলি, তবে যেন পড়াশোনাটাও ঠিক থাকে।’
কথা যখন হচ্ছিল, মুস্তাফিজ বোলিং প্রান্ত থেকে দৌড় শুরু করেছেন, পুরো স্টেডিয়ামে তখন ধ্বনিত হচ্ছে—মুস্তাফিজ! মুস্তাফিজ!
গোটা দেশেও তা-ই!


No comments:

Post a Comment

U.S. Agrees to Release Huawei Executive in Case That Strained Ties With China

  U.S. Agrees to Release Huawei Executive in Case That Strained Ties With China Meng Wanzhou, a senior executive of Huawei Technologies,  ou...