ভারতে বড় ধরনের হামলার ছক কষছে আইএস
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে 'পরোক্ষ যুদ্ধে' প্ররোচিত করার জন্য ভারতে বড়সড় নাশকতার ছক কষছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এর জন্য পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের তালিবানকে যুক্ত করে এক বৃহৎ জঙ্গিবাহিনী গড়ে তুলতে তৎপর হয়ে উঠেছে তারা।
মঙ্গলবার এক মার্কিন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি এক পাক নাগরিকের কাছ থেকে উর্দুতে লেখা ৩২-পাতার একটি নথি উদ্ধার হয়েছে। সেখানেই এই হামলা সংক্রান্ত তথ্য ছিল বলে জানা গেছে। বস্তুত, ওই ব্যক্তির সঙ্গে পাক তালিবানের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। ফলে, আশঙ্কাকে অমূলক ভাবতে নারাজ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে হামলা চালানোর সব রকম প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে আইএস। জঙ্গিগোষ্ঠীর ধারণা, ভারতে হামলা হলে তা অচিরেই আমেরিকাকে প্ররোচিত করবে পাল্টা হামলা চালানোর জন্য। এটাই চাইছে আইএস! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খুল্লমখুল্লা যুদ্ধে না গিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের ঘাঁটিতে নিয়ে এসে যুদ্ধ করা।
এই প্রসঙ্গে মার্কিন পত্রিকাটি ‘আর্মাগেডন’-এর তুলনা টেনে এনেছে। বাইবেল-এর নিউ টেস্টামেন্ট অনুযায়ী, আর্মাগেডন হল শুভ ও অশুভ শক্তির অন্তিম লড়াই। নথিতে বলা হয়েছে, একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব সঙ্গীদের নিয়ে আসবে, অন্যদিকে সব ‘উম্মাহ’ বা মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা একজোট হয়ে পাশ্চাত্য শক্তির মোকাবিলা করবে। সেই লড়াই হবে অন্তিম লড়াই, যাকে আর্মাগেডন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া নথির মর্মার্থ ও সত্যাসত্য যাচাই করার জন্য তা হার্ভার্ডের এক পণ্ডিতকে দিয়ে ইংরেজিতে রূপান্তর করানো হয়। পরে, বিভিন্ন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দিয়ে যাচাই করা হয়। তারা সকলেই জানান, নথিতে যে বিভিন্ন চিহ্ন রয়েছে, তার লেখার ধরন এবং বিভিন্ন নামকরণ— এসব থেকে স্পষ্ট যে তা আসল।কিন্তু কেন ভারতকে বেছে নিয়েছে আইএস? মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র প্রাক্তন কর্তা ব্রুস রিডেল জানান, ভারতে হামলা হলে তাতে আইএস-এর নাম আরও ছড়িয়ে পড়বে। দ্বিতীয়ত, সামগ্রিক দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের স্থিতিশীলতা লঙ্ঘন হবে। বলা যেতে পারে, বিশ্বের নজর আকর্ষণ করতে ভারতই সেরা জায়গা বলে মনে করছে আইএস।
নথি অনুযায়ী, চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য ইতিমধ্যেই আফগান ও পাক তালিবানের বিভিন্ন গোষ্ঠীকে যুক্ত করে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার ভাবনাতচিন্তা করছে আইএস। এতে, একযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সহযোগী দেশগুলির মোকাবিলা করা যাবে, এবং বিশ্বে সন্ত্রাসের প্রতি ভীতিকে আরও প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে। এমনটাই মনে করছে আইএস। শুধু তাই নয়। লড়াই কেমন হবে, তার নীল-নকশাও ওই নথিতে রয়েছে। রয়েছে বিশ্বজুড়ে ‘ক্যালিফেট’ বা খিলাফত-রাজ প্রতিষ্ঠা করতে।নথি উদ্ধার হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছে মার্কিন প্রশাসন। জানা গেছে, হোয়াইট হাউস বিষয়টির ওপর নজর রাখছে। গত দুমাসে মার্কিন ও পাকিস্তানের মধ্যে এই নিয়ে বিস্তর আলোচনাও হয়েছে।
No comments:
Post a Comment